গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের যত্ন | প্রথম ৩ মাসে মায়ের যত্ন

গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে যা যা ঘটে: আজকে আমরা জানবো “গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস কি ঘটে” খবরটার অপেক্ষায় হয়তো দিনরাত এক করেছেন এতদিন তবে এবার শুরু সচেতনতা-শতর্কতা আর নিজের খেয়াল রাখার পালা। যেহেতু গর্ভস্থ সন্তানের একেবারে শুরুর সময় তাই মাকে থাকতে হবে অনেক বেশি সতর্ক কিন্তু বললেই তো আর সতর্ক হওয়া যায়না।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

কারণ অনেক ক্ষেত্রেই মায়েরা বুঝতেই পারেন না যে কি হচ্ছে বা কি হতেপারে অনেকেরই নিজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকে না, জানা থাকে না কি করলে সন্তানের ভালো বা খারাপ হতে পারে।

প্রেগনেন্সির সময় কে তিন মাস করে ভাগ করা হয় যাকে ট্রিমেষ্টার বলে তিনটি ট্রিমেষ্টারেই আপনার এবং আপনার গর্ভের শিশুর পরিবর্তন  কিভাবে হবে তা নিশ্চয়ই জানতে ও বুঝতে ইচ্ছে করে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভাবস্থায় প্রথম 3 মাসের সতর্কতাঃ সাবধানে চলাফেরা করুন। দূরের যার্নিতে সাবধানতা অবলম্বন করুন, রিকশায় চলাচল পরিহার করুন। ডা. রা বলেনঃ আপনি একজন মেয়ের থেকে একজন মা হতে যাচ্ছেন, এর যে পরিবর্তন তা আপনার শরীর ও মনের সব কিছুর মধ্যেই একটা পরিবর্তন আনে। বর্তনের অবস্থাটা এসময় কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে,

প্রথম তিন মাস অবস্থায় বাচ্চা যখন জরায়ুর মধ্যে মাত্র এংকর করল সেটাকে ডাক্তাররা ইম্প্লান্টেশন বলেন। তখন থেকে খুব সাবধানে চলাফেরা করতে হবে। কারণ বেশি লাফালাফি ও দোড় ঝাফ করলে অনেক সময় জড়ায়ুর মধ্যে বাচ্চার থলি অনেক দূরে যেতে পারে আর এটার জন্য এবরশন হয়ে যাওয়ার চান্স থাকে।

দ্বিতীয়ত বেশি যাত্রার জার্নি করলে ওই একই অবস্থা হতে পারে। হঠাৎ কোনো ঝাকানি লাগলো গাড়িতে উঠলে রাস্তাঘাটে কোনো ভাঙ্গা জায়গায়  হঠাৎ ঝাকানি লাগলো তাই ডাক্তাররা বলেন এসময় যাতায়াত যত কম করা যায় ততই ভালো। যেহেতু আপনি অন্তঃসত্ত্বা তাই আপনাকে সব সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।

তাই ভালো স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে এখনই যোগাযোগ করুন। সন্তান ধারণের ফলে শরীরে হরমোন ঘটিত বেশ কিছু পরিবর্তন হয়, যার কারণে বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, খেতে না পারা, শরীরের খারাপ ভাব হতে পারে। এমন কিছু হলে ভয় পাবেন না, আবার না হলেও চিন্তা করবেন না। আসলে আপেক্ষিক প্রথমত মন খারাপ হয়।

এটা তাদেরই হয় একদম কম বয়সে যারা প্রেগন্যান্সী হন। ডাক্তাররা বলেন অপ্রাপ্ত বয়স্কদের যখন গর্ভবতী হয়ে যাচ্ছে! আমাদের দেশে বিয়ের সময় বলা হয়েছে 18 বছর বয়সের আগে বিয়ে হবে না। বিশের আগে বাচ্চা নিবে না। কিন্তু এটা অনেকেই মানতে পারছেন না।

অনেক রোগীরা বলেন মায়েরা বলেন ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে, তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই বিষন্ন ভাব আসে, কারণ তার ছোট বেলার সময়টা পার হওয়ার আগেই সে আরো একটা শিশুর জন্ম দিতে চাচ্ছে। এই কারণে বিষণ্নতা।

আনওয়ান্টেড প্রেগনেন্সিঃ অনেকেই মনে মনে প্লান্ট করেছিল বিয়ের পরে আরো কিছুদিন পরে সন্তান নিবে। কিন্তু অনাগত কারণে তার বাচ্চাটা এসে গেছে, এজন্য ভাবনাটা বেশি আসে যে সবসময় পাশে কিভাবে কাটাবে, বাচ্চা নেওয়ার বয়স তিরিশের পরে অথবা প্রথমত এটা কম হবে।

এবং প্ল্যান করে যদি প্রেগনেন্সিতে হয় স্বামী-স্ত্রী পরিবারের সবার সাথে সমঝোতা করে একটা পদ্ধতি নিয়ে বলল বিশের পরে বা তার পরে সময় মতো তারা বাচ্চা নিবে তাহলে তাদের মধ্যে মনের খুশি নিয়ে একটা বাচ্চা নেওয়ার আদেম্য ভাবটা কম হবে। বেশি বমি হলে সকালে উঠে লেবু জল খেয়ে নিন, সন্তান গর্ভে ধারণ করার ফলে কিছু শারীরিক পরিবর্তন হেতু এমন হয়।

সন্তান গর্ভ ধারণ করার পর এবং জরায়ুর অবস্থান থাকে প্রস্রাবের নালীর ঠিক উপরে বাচ্চা থাকে তাই বাচ্চার বৃদ্ধির সাথে সাথে জরায়ু প্রস্রাবের নারীর উপর চাপ ফেলতে থাকে এর ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। এছাড়াও অনেক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কারও কারও রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে কারও আবার কমে যেতে পারে। সেই সাথে দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিকে সমস্যা। তবে এমন কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিয়মিত চেকআপ এর মধ্যে সুস্থ থাকতে হবে। বুক জ্বালা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও হতে পারে অনেক মায়ের অন্তঃসত্ত্বা নারীর খাবার হতে এটা বেশি হয়।

পেট খালি হতে অনেকের অন্য নারীদের তুলনায় বেশি সময় লাগে কারণ গর্ভস্থ বাচ্চার পুষ্টি গ্রহণ করতে একটু বেশি সময় লাগে  আর এটাই গর্ভবতী নারীর জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। ঘাবড়ে যাবেন না দয়াকারে ডাক্তারের পরামর্শমতো ওষুধ খান বুক জ্বালাপোড়ার কারণ এসিডিটি। ডাক্তাররা বলেন খাবারের জন্য গ্যাসের সমস্যা যেটাকে আমরা সাধারণভাবে গ্যাসের ওষুধ বলি (আন্টি আলসার) এরকম কিছু ওষুধ খাওয়া যায়।

কিন্তু তার আগে আপনি যদি খাওয়ার নিয়ম মেনে চলেন তাহলে ভোগান্তি পোহাতে হবে। এসব হওয়ার কারন অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা এর কারনে এসিডিটি হয় অল্প করে যদি  বারেবারে খান তাহলে এই সমস্যাটা বেশি হবে না। আর যদি আপনি পানি কম খান তাহলেও এসিডিটি করে, পেশাবের জ্বালা পোড়া করে এই স্বাভাবিক নিয়মে যদি খেতে থাকে অল্প অল্প করে বারেবারে খাবে তাহলে দেখা যাবে জ্বালাপোড়া হয় না ও শুধু কম খাওয়া লাগে।

এত কিছু পরামর্শ দেয়ার কারন এই  যে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে কিন্তু গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে বেশি। পেট থেকে বেরিয়ে গেলেই ছোট্ট শিশুটিকে কোলে আসার পথে আর তেমন কোনো বাধাই থাকে না এবার চলুন দেখে নেয়া যাক গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস কী খাবেন আর কী খাবেন না।

গর্ভবতীর প্রথম 3 মাসের সতর্কতা তাও খাদ্য সাধারণ খাবারের সাথে অতিরিক্ত এক গ্লাস দুধ ও দুইটি অতিরিক্ত রুটি খেতে পারেন এছাড়া তাজা ফলমূল ও শাকসবজি খাবেন দিনে দুটি ডিম খাওয়ার চেষ্টা করুন 8 থেকে 10 গ্লাস রোজ ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন কেননা এতে ঘুম কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে কিছু ড্রিঙ্কস চাইলে ফলের জুস দই লাচ্ছি এসব খান যতটা সম্ভব বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন বাড়ির টাটকা রান্না খান এ সময় কিছু জিনিস অবশ্যই দরকার হয়।

এর মাঝে একটি হল অলিক এসিড ওষুধের পাশাপাশি সবজি থেকেও খানিকটা ফল পেতে পারেন আপনি বাচ্চার শরীরে যা প্রয়োজন বাচ্চার একটা হাড় গঠনের জন্য বাচ্চার শরীরের সে কিন্তু মায়ের রক্ত থেকে এটাকে নিয়ে নেয়। কারণ সেগুলো পরজীবী আর মায়ের শরীরের যেটা দরকার ছিল প্রতিদিন সেখানে ঘাটতি পরে এইখানে আমরা বলি কিছু ওষুধ সাপ্লিমেন্ট হিসেবে দেওয়া লাগে।

যেমন প্রথম গর্ভবতী হওয়ার তিন মাস আগের থেকে যদি ফলিক এসিড, আরজি এই ওষুধ সেবন করে তার অনেকগুলো উপকারিতা পাওয়া যায় চারপাশটা উপকারিতা আছে যেটা হলো ওই বাচ্চার গঠন তা সঠিকভাবে হবে তার ব্রেনটা ভালো ডেভলপ হবে এবং সেই গর্ভকালীন যে গর্ভ অবস্থার জেস্টেশনাল সামনে বলে একটা জলের মধ্যে ভালোভাবে আটকায় থাকবে।

এটা এবরশন থেকে বাধা যাবে আর তিন মাস পর পর হলে তখন তাকে আমরা ক্যালসিয়াম যোগ করি এ ক্যালসিয়াম তার শরীরে হাড়ের গঠনে যে ক্যালসিয়াম প্রয়োজন ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হবে না এভাবেই দেখা যায় কোমর ব্যথা পায়ের দুই পাশে যে কাফ মাসেল আমরা বলি দুই পায়ের নিচের অংশে মাংসের মধ্যে একটা চাবায় বলে।

আমরা ক্র্যাম্প বলি এইগুলো থেকে ক্যালসিয়াম এবং আয়রন এটা যদি সে নিয়মিত সেবন করে তাকে আমরা বলি সাপ্লিমেন্ট এটা কিন্তু কোন ওষুধ না এন্টিবায়োটিক না তার শরীরের ঘাটতি হচ্ছে বাচ্চাটা গঠন হওয়ার জন্য সেটাকে সেট সমতা রক্ষা করবে খাবার তালিকায় রাখুন করোলা ক্যাপসিকাম ব্রোকলিঃ মেথি পুদিনা ধনে বাদাম কিশমিশ ইত্যাদি।

আনারসের সাথে সাথে কাঁচা বা আধা সিদ্ধ প্রোটিন যেমন মাছ মাংস ডিম এড়িয়ে চলতে হবে প্রোটিন ভালো করে রান্না করে তবেই খাবেন গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে ভ্রূণের বৃদ্ধি গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে বাচ্চা হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের গঠন হওয়া শুরু হয়ে যায় এ সময় শিশুর হাত পা মস্তিষ্ক স্নায়ু রজ্জু এবং স্নায়ুর গঠন শুরু হয়ে যায়।

তখন হয় একটা মটর দানার মতো দ্বিতীয় মাসে ভ্রূণের বৃদ্ধি পেয়ে সিমের দানার মত হয় গোড়ালি কব্জি আঙ্গুল ও চোখের পাতা তৈরি হয় হাড়ের গঠন শুরু হওয়ার সাথে সাথে যৌনাঙ্গ এবং অন্তঃকর্ণ বিকাশ শুরু হয় দ্বিতীয় মাসের শেষের দিকে ভ্রূণের আট থেকে দশটি প্রধান অঙ্গ গঠিত হয় শিশু এতদিনে হাত পা নাড়াচাড়া শুরু করে দেয় যদিও তার টের পাবেন না।

আপনি অভিনন্দন প্রথম টেস্টের শেষ মাইলস্টনে পৌঁছে গেছেন আপনি গর্ভস্থ শিশু এতদিনে সাড়ে তিন ইঞ্চি হয়ে গেছে ওর আরো বেশি বৃদ্ধি ও তরতরিয়ে চলছে ভবিষ্যতের জন্য ভিত্তি তৈরি হচ্ছে হাটু পায়ের আঙ্গুলের গঠন ও চলছে পাশাপাশি এই সময় অন্তর গঠন শুরু হয় এবং - প্রায় স্বচ্ছ হয়ে থাকে।

তবে তা মোটামুটি জানলেন তবে এখানেই আপনার দায়িত্ব শেষ নয় গর্ভাবস্থায় অবশ্যই নিয়মিত ডাক্তারের ফলোআপে থাকবেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলবেন আপনার ও আপনার অনাগত বেবির জন্য অনেক শুভকামনা রইল?

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ