ফ্রিল্যান্সিং নাকি চাকরি কোনটি করা উচিত? জেনে নিন

Job vs Freelancing: বর্তমান সময়ে চাকরি যেন সোনার হরিণ, অপরদিকে অনেকেই অনলাইন থেকেই ইনকাম করছে লাখ লাখ টাকা।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

আর সে কারণে আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে, ক্যারিয়ার গড়ার জন্য কোনটি বাছাই করবো, চাকরি নাকি ফ্রিল্যান্সিং।

আর আজকে আমি আপনাকে এই বিষয়ে পরিস্কার ধারনা দিবো। যাতে করে আপনি সঠিক সময়ে সঠিক সিন্ধান্ত নিতে পারেন। 

চাকরি করবো নাকি ফ্রিল্যান্সিং করবো?

আমরা যখন কোনো ফ্রিল্যান্সার এর সাকসেস স্টোরি গুলো দেখি। তখন আমাদের মধ্যেও এক ধরনের সুপ্ত ইচ্ছার প্রকাশ ঘটে। এবং তখন আমরা ভাবতে থাকি যে, চাকরি পেতে হলে অনেক কষ্ট করতে হয়।

কিন্তুু আমরা যদি নিজের ঘরে বসে অনলাইন থেকে ইনকাম করি। তাহলেই তো আর চাকরির মতো কষ্ট করতে হচ্ছেনা।

হুমম এটা সত্যি যে অনলাইনে নিজের ঘরে বসে টাকা ইনকাম করা যায়। কিন্তুু প্রদীপের নিচে যেমন অন্ধকার থাকে, ঠিক তেমনি ভাবে অনলাইন ইনকাম বা ফ্রিল্যান্সিং এর পেছনেও একটা অন্ধকার জগৎ রয়েছে। 

কিন্তুু আমরা সেই অন্ধকার জগৎ কে গুরুত্ব না দিয়ে। শুধুমাত্র অন্যদের সাকসেস স্টোরি দেখে নিজেও হুমড়ি খেয়ে পড়ছি ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য। যা একজন মানুষের কখই করা উচিত নয়। 

তাই চলুন, এবার জেনে নেয়া যাক, চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো কি কি। 

চাকরি বনাম ফ্রিল্যান্সিং কোনটি ভালো?

দেখুন আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার ও একজন চাকরিজীবি কে একখানে দাড় করান। তাহলে আপনি তাদের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য দেখতে পারবেন।

আর যখন আপনি এই পার্থক্য গুলো জানতে পারবেন। তখন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে, ক্যারিয়ার গড়ার জন্য চাকরি ভালো নাকি ফ্রিল্যান্সিং ভালো। 

০১। ইনকাম এর দিক থেকে চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিংঃ মনে করুন, আপনি একটি চাকরি করেন। আর সে কারনে আপনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে আপনাকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা বেতন প্রদান করা হবে। 

অপরদিকে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে লক্ষ্য করেন। তাহলে দেখতে পারবেন একজন ফ্রিল্যান্সার এর মাসিক ইনকাম এর কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।

এখানে আপনি কোনো মাসে লাখ টাকাও ইনকাম করতে পারবেন। আবার দেখা যাবে, আপনি কোনো মাসে ফ্রিল্যান্সিং করে এক টাকাও ইনকাম করতে পারবেন না। 

কেননা, আপনি এমন কোনো ফ্রিল্যান্সারদের দেখাতে পারবেন না। যারা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবে যে, তিনি প্রতি মাসেই একই পরিমান টাকা আয় করতে পারবেন।

কারন, একজন ফ্রিল্যান্সার প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ সংগ্রহ করতে হয়। 

কিন্তুু কোনো কারণে যদি এই মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে কাজ সংগ্রহ না হয়। তাহলে সেই ফ্রিল্যান্সার এর ইনকাম এর পরিমান হবে একবারে শূণ্য। 

০২। বাড়তি ইনকামের সুবিধায় চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিংঃ এখন যদি আপনি একমাসে ফ্রিল্যান্সিং করে ১০ হাজার টাকা ইনকাম করেন। তাহলে পরের মাসে আপনি আরো বেশি কাজ করে আপনার ইনকাম এর পরিমান বাড়াতে পারবেন।

কেননা, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আপনি যতো বেশি দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারবেন। আপনার অনলাইন আয় এর পরিমান ঠিক ততো বেশি বৃদ্ধি পাবে। 

তবে চাকরি তে আপনি এই বিশেষ সুবিধা টি পাবেন না। কারন, একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরির শুরুতেই আপনাকে আপনার বেতনের সীমাবদ্ধতা জানিয়ে দেওয়া হবে। এবং সেই সীমা অনুযায়ী আপনি প্রতি মাসে বেতন পাবেন।

আর সে কারণে ইনকাম বৃদ্ধির দিক থেকে ফ্রিল্যান্সিং সর্বদাই এগিয়ে থাকবে। কেননা, এখানে কাজের পরিমাপ এর ভিত্তি করে ইনকাম হয়। তাই আপনি যতো কাজ করবেন ততো ইনকাম হবে এটাই স্বাভাবিক বিষয়।

০৩। স্থায়ী ইনকামের দিক থেকে চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিংঃ একটা কথা জেনে রাখুন, ফ্রিল্যান্সিং এর ইনকাম কখনোই স্থায়ী হয়না। হয়ত চলতি মাসে আপনি লাখ লাখ টাকা ইনকাম করে জিরো থেকে হিরো হতে পারবেন।

কিন্তুু পরের মাসেও যে আপনি হিরো হয়ে থাকতে পারবেন বিষয়টা এমন নয়। 

কিন্তুু একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে আপনি স্থায়ী ইনকামের সোর্স তৈরি করতে পারবেন। কারন, চাকরি শুরুর আগে আপনার যে বেতন নির্ধারন করা হবে।

সেই পরিমান বেতন আপনি প্রতিমাসে চাকরি করে উপার্জন করতে পারবেন। আর এটি হলো চাকরির বিশেষ সুবিধাজনক দিক। 

০৪। সম্মানে দিক থেকে চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিংঃ একটা প্রবাদ আমরা সবাই জানি। সেটি হলো, যখন আপনার হাতে টাকা থাকবে, তখন আপনি কে সেটা ভুলে যাবেন। কিন্তুু যখন আপনার কাছে টাকা থাকবে না, তখন পুরো পৃথিবী ভুলে যাবে আপনি কে। 

তো এখন আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছেন, তাহলে সেটা আপনার জন্য সম্মানজনক।

কিন্তুু কোনো কারণে যদি আপনার ফ্রিল্যান্সিং আইডি ব্যান হয় কিংবা আপনার ইনকাম ড্রপ করে। তাহলে কিন্তুু আপনার অর্জিত অর্থের বিনিময়ে প্রাপ্য সম্মান হারিয়ে যাবে। 

কিন্তুু আমাদের দেশে চাকরি করলে একটা স্থায়ী সম্মান অর্জন করা হয়। আর এই সম্মান আপনি ততোদিন বজায় রাখতে পারবেন। যতদিন আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত অবস্থায় থাকবেন। 

ফ্রিল্যান্সিং নাকি চাকরি কোনটি করা উচিত?

দেখুন, আপনার আসলে কি করা উচিত সেটা আপনাকেই সিন্ধান্ত নিতে হবে। আমি শুধু আমার দীর্ঘ দিনের অনলাইন জার্নির অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম আপনার সাথে।

এখন সিন্ধান্ত আপনার, আপনি কি চান সেটি ভেবে দেখুন। আপনার জন্য কোনটি উপযু্ক্ত হবে তা নিয়ে চিন্তা করুন। 

মনে রাখবেন, এই জীবনের মধ্যে সময় খুব মূল্যবান। যদি আপনি সময় কে গুরুত্ব না দেন, তাহলে আপনাকে অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়তে হবে। তাই ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না। 

পরিশেষে আপনার জন্য কিছুকথা

চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিং একজন মানুষের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য দুটোই উপযু্ক্ত। তবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনি যে কোনো কাজেই নিজের দক্ষতার পরিচয় দিতে পারলে তার মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন। 

আর আপনি যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলো খুব সহজ ভাষায় জানতে চান। তাহলে Jit.com.bd এর সাথে থাকার চেষ্টা করবেন। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। 

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

জীবনে ঝুঁকি নাও।জিতলে নেতৃত্ব দিবে।আর হারলে,পরবর্তী কাউকে পথ দেখিয়ে দিবে।