ট্রেড লাইসেন্স কী ভাবে করবেন?

ট্রেড লাইসেন্স হচ্ছে ব্যবসার প্রাথমিক ডকুমেন্ট। যেকোনো ব্যবসা শুরু করতে গেলে আপনার প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হবে।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

ট্রেড লাইসেন্স কোথায় পাবো, এবং কি কি কাজে আসে, এবং কি ডকুমেন্ট লাগে । তার বিস্তারিত জানবো আজ । নিচে এর গাইডলাইন দেওয়া হল।

ট্রেড লাইসেন্স কোথায় পাবো :

ব্যবসা শুরু করতে হলে সর্বপ্রথম আমাদের ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হয় । ঢাকার মাঝে সিটি কর্পোরেশন ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে থাকে।

একটু ছোট শহরে পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে থাকে।গ্রাম অঞ্চলে ইউনিয়ন পরিষদ ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে থাকে।

 ট্রেড লাইসেন্স এর বিস্তারিত ডকুমেন্ট :

একটি ট্রেড লাইসেন্স এ আপনার বিস্তারিত ডকুমেন্ট লেখা থাকবে যেমন : ট্রেড লাইসেন্স এর নাম্বার, ছবি, বায়োগ্রাফি,বর্তমান ঠিকানা,এবং স্থায়ী ঠিকানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম, ব্যবসার ধরন, এবং সরকারকে কত টাকা ফ্রি দিয়েছেন তা উল্লেখ থাকবে।

আর এই ট্রেড লাইসেন্স খুব যত্ন করে রাখতে হবে। একজন ব্যক্তি অনেকগুলো ট্রেড লাইসেন্স থাকতে পারে এবং একটি ট্রেড লাইসেন্স একাধিক ব্যবসা ধরণ উল্লেখ থাকতে পারে।

ট্রেড লাইসেন্স সময়কাল :

একটি ট্রেড লাইসেন্সের সময়কাল প্রত্যেক বছর পহেলা জুলাই থেকে,৩০ জুন পর্যন্ত সময়কাল থাকে। কোন কারনে আপনি যদি ২৫ মে একটি ট্রেড লাইসেন্স করেন তাহলে এটি আবার পহেলা জুলাই নতুন করে নবায়ন করতে হবে।

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা বাধ্যতামূলক। না করলে অটোমেটিক বাতিল হয়ে যাবে।

ট্রেড লাইসেন্স এর বিষয়ে আরো আমাদের  যে বিষয়গুলো চিন্তা আসতে পারে। অনেক সময় আমাদের মনে প্রশ্ন আসে।

যেমন: সুমন এন্টারপ্রাইজ, সুমন কোম্পানি,সুমন কর্পোরেশন, এ নাম গুলো কোন ভূমিকা আছে কিনা।

আপনারা এটা মনে রাখবেন নাম বা টাইটেলের উপর ব্যবসা কোন ভূমিকা নেই । এটা আপনার ব্যবসার ধরনের উপর নির্ভর করবে, আপনার ব্যবসা কতটুকু মূল্যবান, আর কি কি ধরন লেখা আছে ট্রেড লাইসেন্সে।

 আর একটি বিষয় হলো আমরা যে লিমিটেড লেখা দেখি, এই লিমিটেড কোম্পানি আগেই আর জে সি কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়।

আর জে সি হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। লিমিটেড কোম্পানির নিবন্ধনের জন্য এটি একটা সংস্থা। যার ফুল মিনিং হলো রেজিস্টার জয়েন্ট কোম্পানি।

সেখান থেকে আগে নামের অনুমোদন নেওয়া হয় তারপর লিমিটেড নামের ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

যৌথ অংশীদার ট্রেড লাইসেন্স :

যদি ট্রেড লাইসেন্সে যৌত অংশীদার থাকে, দুইজন হলে দুজনেরই ছবি দিতে হবে। কিন্তু দুইজনের বেশি হলে। প্রথম নামের পাশে গং লেখা  থকবে এবং প্রত্যেক ছবির উপর পিন আপ থাকবে।

যেকোনো ব্যক্তির ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারে।

ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ডকুমেন্ট :

  • ব্যবসার জায়গাটা বাণিজ্যিক এলাকায় কিনা। এবং জায়গার কাগজ। 

  • যদি অন্য কারো জায়গা থাকে তাহলে চুক্তিপত্র 

  • একটা কপি দিত হবে।

  • আইডি কার্ডের ফটোকপি 

  • ৪ কপি ৫ ফুট সাইজের ছবি 

আপনি যদি পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করেন তাহলে, আবেদনের ফর্মে যে ধায‍্য টাকা আছে এবং ১৫% ভ‍্যাট দিতে হবে। 

তাহলে আপনি তিন থেকে পাঁচ দিনের ভিতর ট্রেড লাইসেন্স পাবেন। যদি আপনার কাগজ ঠিক থাকে। তাহলে অবশ্যই পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ । 

আপনার একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় ব্যবসা করতে পারবেন।

অনেকেই জানতে চান যে পার্টনার শিফটে কি ডিড দিতে হবে ? হ‍্যা ডিড দিতে হবে আপনার 300 টাকার একটি স্ট্যাম্পে একটি ডিড দিতে হবে এবং যদি রেজিস্টার হয় তাহলে খুব ভালো । রেজিস্টার না হলে ট্রেড লাইসেন্স আপনাকে দিবে।

আর একটা হল যদি নিজের জায়গায় ব্যবসা করতে চাই।  তাহলে চুক্তিপত্র কোন কাগজ লাগবে না। চুক্তিপত্রে এর বিপরীতে আপনার জায়গার ঘর এবং ফোল্ডিং ট্যাক্সের একটা রশিদের ফটোকপি দিতে হবে।

ট্রেড লাইসেন্স যেসব কাজে লাগবে :

  • ব্যবসা দাবি করলে প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স লাগবে 

  • ডিলার শিপ করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স লাগবে এজেন্টের জন্য ট্রেড লাইসেন্স লাগবে 

  • কর্পোরেট সিম নেওয়ার জন্য মোবাইল কোম্পানি থেকে ট্রেড লাইসেন্স লাগবে 

  • ব্যাংকে যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের নামে অ্যাকাউন্ট খুলতে চান তাহলে ট্রেড লাইসেন্স লাগবে 

  • ব্যবসার সাথে জড়িত প্রত্যেকটি কাজে আপনার ট্রেড লাইসেন্স। 

আর আপনি যদি ব্যবসা করেন এবং ট্রেড লাইসেন্স না করে। তাহলে সরকার আপনা বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। 

তাই ব‍্যবসার জন‍্য ট্রেড লাইসেন্স অত্যন্ত প্রয়োজন । আশা করছি বুঝতে পারছেন।

ট্রেড লাইসেন্স বিভিন্ন ধরনের হয় এবং বিভিন্ন নিয়ম মেনে তা করতে হয় যেমন :

ফ্যাক্টরি ট্রেড লাইসেন্স :

আপনার ফ্যাক্টরি লে-আউট জমা দিতে হবে। এবং পার্শ্ববর্তী ভবন বা স্থাপনা গুলি আছে তাদের কাছ থেকে অনা আপত্তি পত্র জমা দিতে হবে। পরিবেশ ছাড়পত্র জমা দিতে হবে।

ফায়ার সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে এবং আপনি যে সরকারের সকল নিয়ম কানুন মেনে চলবেন তার জন্য ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে আপনার অঙ্গিকার নামে জমা দিতে হবে।

ট্রাভেল এজেন্সি লাইসেন্স :

এর জন্য আপনার সিভি লেন্সের অনুমতি পত্র লাগবে। আপনি যদি রিকোয়েড এজেন্ট করলেন তাহলে ম্যানপাওয়ার থেকে অনুমতি পত্র নিতে হবে।

আপনি যদি গুলা-বারুদ  বা এসিড জাতীয় কোন জিনিসপত্র রাখেন বা রাখতে চান তাহলে আপনার ট্রেড লাইসেন্সের সাথে ঢাকা ডিসি অফিসের অনুমতি লাগবে।

আবাসিক হোটেলের জন্য ডিসি অফিসের অনুমতি লাগবে ।

ফাস্ট ফুড দোকান করতে চাইলে সিভিল সার্জনের হেলথ সার্টিফিকেট নিতে হবে। যদিও অধিকাংশ ফাষ্ট ফুড দোকানদার এই নিয়ম মেনে চলে না।

আপনি যদি ক্লিনিক বা হাসপাতাল করতে চান তাহলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নিতে হবে ।

ওষুধের ব্যবসা করতে চান তাহলে  আপনার ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে।

আর যদি আপনি তৈলের পাম দিতে চান তাহলে ফায়ার সার্ভিস এবং পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে।

অর্থাৎ একটি ব্যবসা করতে গেলে ব্যবসার রিলেটেড যে কোন কাজে ট্রেড লাইসেন্স অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই আপনারা সবাই ব্যবসা করার চিন্তা করার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স করে ফেলুন ।

ট্রেড লাইসেন্স সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন? ধন্যবাদ

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

Vill : Kawrat P.O : Gobindopur P.S : Gouripur Dist : Mymensing Natinality : Bangladeshi