হ্যাকিং হ্যাক হ্যাকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজ আপনাদের জানাব হ্যাকিং বা হ্যাক সম্পর্কে বিস্তারিত।  আমাদের মাঝে অনেকে আছে যারা হ্যাকিং করতে চায় বা হ্যাকিং শিখতে চায় বা প্রফেশনাল হ্যাকার হতে চায়, এখন এই হ্যাকিং করতে কি কি জানা প্রয়োজন, হ্যাকিং শেখার উপায়, হ্যাকিং কি, এই সব বিষয় সম্পর্কে আজ বিস্তারিত ভাবে জানবো।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

হ্যাকিং কি ? হ্যাকিং কত প্রকার ? হ্যাকার কাকে বলে ? হ্যাকার কত প্রকার ? হ্যাকিং করতে কি কি জানা প্রয়োজন ? হ্যাকিং শেখার উপায় ? সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ

    হ্যাকিং সম্পর্কে জানুন

হ্যাকিং (Hacking) শব্দটা শুনলে মনে হয় এটা একটা সাইবার ক্রাইম (Cyber Crime) হ্যা hacking মূলত সাইবার ক্রাইম হলেও এর বৈধতা আর অবৈধতা দু'টি দিকই আছে। কোনো জিনিসের যেমন ভালো দিক রয়েছে তেমনি খারাপ দিকও আছে। এইগুলো মূলত ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করে।

আপনি যদি hacking বৈধ ভাবে পরিচালনা করেন তাহলে এটি cyber crime এর অন্তর্ভূক্ত হবে না যেটাকে বলা হয় Ethical hacking নিচের আলোচনা গুলো পড়লে বুঝতে পারবেন । 

হ্যাকিং কিঃ

Hacking (হ্যাকিং) এমন এক প্রক্রিয়াকে বলা হয়, যার মাধ্যমে কম্পিউটারের দূর্বলতা খুজে সেই দূর্বলতা গুলোর সুযোগ নিয়ে কম্পিউটারে প্রবেশ করে সেখানে থাকা ডাটা, ফাইল, তথ্য চুরি করা বলা সরিয়ে ফেলা । 

এক কথায়, সাইবার সিকিউরিটির প্রাচীর ভেদ করে কোনো ডিভাইসের মধ্যে থাকা তথ্য হাতিয়ে নেওয়া বা তথ্য চুরি করাকে হ্যাকিং (Hacking) বলে । 

হ্যাকিং কতো প্রকারঃ

হ্যাকিং অনেক প্রকার হয়ে থাকে । মূলত Technology বা Device এর উপর ভিত্তি করে hacking প্রকার নির্বাচন করা হয় । যার মধ্যে কয়েকটি হলোঃ- 

  1. website hacking. 
  2. Network hacking. 
  3. Computer hahacking.
  4. Server hacking. 
  5. Password hacking. 
  6. Email hacking.
  7. Bank account hack.
  8. Account hacking.
  9. Misconfiguration Attacks.
  10. IP hacking ইত্যাদি।

হ্যাকার কাকে বলেঃ

যারা তাদের দক্ষতা (skill)  জ্ঞান দিয়ে অন্যান্য কম্পিউটারের সিস্টেমে চুপিসারে প্রবেশ করে তথ্য চুরি করে নেয় বা অন্যান্য কাজ করে তাদেরকে হ্যাকার (Hacker) বলে । 

আমরা জানলাম, হ্যাকিং কি, হ্যাকিং কতো প্রকার এবং হ্যাকার কাকে বলে, এখন আমরা জানবো হ্যাকার কতো প্রকার ? 

হ্যাকার কত প্রকারঃ

হ্যাকার সাধারণত তিন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন,

  1. WHITE HAT HACKER
  2. BLACK HAT HACKER
  3. GREY HAT HACKER 

এখন এই হ্যাকাররা কিভাবে কাজ করে সেগুলো সম্পর্কে জানবো। 

1. WHITE HAT HACKER : এই হ্যাকাররা সাধারণত মানুষের উপকার করে থাকে । এরা কোনো ওয়েবসাইট হ্যাক হলে সেই ওয়েবসাইটের সিস্টেমকে আবার আগের মতো করে দেয় ।

কারো আইডি হ্যাক হলে সেই আইডি ফিরিয়ে আনে ইত্যাদি ভালো কাজগুলো করে WHITE HAT HACKER রা এদেরকে (Ethical hacker) ইথিক্যাল হ্যাকারও বলা হয়ে থাকে । 

2. BLACK HAT HACKER : এই হ্যাকাররা সাধারণত খারাপ উদ্দেশ্য হ্যাক করে থাকে । ওয়েবসাইট হ্যাক করে সেখানে থাকা মূল্যবান তথ্য ফাঁস করা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মতো কাজ করে থাকে এই হ্যাকাররা ।

3. GREY HAT HACKER : এই হ্যাকাররা প্রফেশনাল হ্যাকার হয় না এরা কখনো white hat hacker দের মতো কাজ করে আবার কখনো black hat hacker দের মতো কাজ করে । এই হ্যাকাররা কিছু নিরপেক্ষ মানুষের মতো কাজ করে । এরা সাধারণত তাদের শখ মেটানোর জন্যই হ্যাকিং করে থাকে ।

এখন চলুন জেনে নেই, হ্যাক করার জন্য কি কি জানা প্রয়োজন । হ্যাকিং শেখার উপায় সম্পর্কে ।

হ্যাক বা হ্যাকিং করার জন্য যে বিষয় গুলো অবশ্যই জানা প্রয়োজন সেই সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলোঃ- 

  1. Linux.
  2. Programming Language
  3. Networking and Device
  4. Server
  5. Database
  6. Hardware
  7. Security
  8. Stay Anonymous

এবার চলেন এই বিষয় গুলোর কিছু প্রাথমিক ধারনা নিয়ে আশা যাক । আপনি পড়ছেন হ্যাকিং কি ? হ্যাকিং কতো প্রকার ? হ্যাক করার জন্য কি কি জানা প্রয়োজন ? হ্যাকিং শেখার উপায় সম্পর্কে ।

1. Linux : হ্যাক করতে হলে আপনাকে windows ছেড়ে Linux ব্যবহার করতে হবে । Linux তৈরী করা হয়েছে হ্যাকিং থেকে বাচার জন্য বা হ্যাকিং ঠেকানোর জন্য । যেটা দিয়ে হ্যাকিং ঠেকানো যায় সেটা দিয়ে হ্যাকিং করাও যায় । আপনি অনেক Linux এর disk পাবেন । তার মধ্যে সাধারণত Black Linux হ্যাকাররা ব্যবহার  করে থাকে । windows হলো পেইড সফটওয়্যার কিন্তু Linux হলো open soc operating system যার মধ্যে আপনি ৩০০ টিরও বেশি হ্যাকিং টুল ইনষ্টল করা আছে ।

2. Programming Language : programming language হলো কম্পিটারের ভাষা আপনি যতো বেশি প্রোগ্রামিং ভাষা জানতে পারবেন আপনি ততো বেশি হ্যাকিং জগতে দক্ষ হতে পারবেন, তবে হ্যাকিং করতে আপনাকে কয়েকটি programming language জানতে হবে । যেমনঃ JAVA, PYTHON, CSS ইত্যাদি ।

3. Networking and Database : হ্যাকিংয়ের একটি প্রবাদ আছে, ইন্টারনেট কানেক্টেট প্রত্যেকটি জিনিস হ্যাক করা যায় । তাই আপনাকে networking সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে হ্যাকিং করার জন্য তার্গেট নির্বাচন অথবা তথ্য সংগ্রহের জন্য ইন্টারনেট কানেশন লাগবে । হ্যাকিং করার জন্য আপনাকে port, connection protocol, DNS, IP সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে ।

4. Server : আপনি যদি কোনো বিষয় সম্পর্কে না জানেন তাহলে আপনি সেই বিষয়ে ভুল বের করতে পারবেন না । তাই আপনাকে ওয়েবসাইট হ্যাক করতে server সম্পর্কে জানতে হবে । একটি server এ কি কি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকে এবং কিভাবে সেটা bypass করা যায় সেই বিষয়ে জানতে হবে ।

5. Database : সাধারণত সব হ্যাকাররা এক্সিবল ইনজেকশন নামে একটি মেথড ব্যবহার করে করে । এই মেথড ব্যবহার করে তারা username password চুরি করে ডাটা চুরি করে থাকে । এই বিষয়ে আপনার জ্ঞান রাখতে হবে ।

6. Hardware : আপনি যতো বেশি hardware এর জ্ঞান অর্জন করবেন system এ থাকাconfiguration ততো বেশি সহজ হবে । hardware এর মাধ্যমে বিভিন্ন operating system দূর্বলতা বের করে হ্যাক করা যায় ।

7. Security : আপনি যখন কোনো ভাইরাস তৈরী করবেন তখন server এ থাকা এন্টিভাইরাস এটাকে বাধা দিবে । হ্যাকিং করার সময় আপনি যে সমস্যায় পরবেন তা হলো security. Security সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে ।

8. Stay anonymous : anonymous সাথে থাকা সাধারণত প্রফেশনাল হ্যাকাররা কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে IP hide করে থাকে । যার কারণে তাদের খুজে বের করা মুশকিল হয়ে যায় । আপনাকে এই বিষয়ে জানতে হবে ।

হ্যাকিং শেখার উপায়ঃ

হ্যাকিং শিখতে অথবা হ্যাক করতে আপনার থাকতে হবে অনেক অনেক ধৈর্য্য । আপনার যদি ধৈর্য্য থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকার তাহলেই আপনি হ্যাকিং শিখতে পারবেন বা হ্যাক করতে পারবেন । হ্যাকিং কোনো যেনো তেনো ব্যাপার না এর জন্য আপনার থাকতে হবে প্রবল ইচ্ছা শক্তি ।

আপনার যদি একান্তই হ্যাকিং শেখার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনাকে হ্যাকিং শেখার কোর্স করতে হবে । অনেক ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে কোর্স করিয়ে থাকে, নেটে সার্চ করে দেখতে পাবেন।

এক কথায় আপনি যদি হ্যাকিং শিখতেই চান তাহলে উপরে আলোচ্য বিষয় গুলোর উপর জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং দক্ষ হতে হবে । এছাড়াও আরো কিছু বিষয় জানতে হবে যেগুলো হলোঃ- 

  1. Basic computer Knowledge 
  2. Scription 
  3. Web application 
  4. Virtualization 
  5. Wireless technologies 
  6. Advanced TCP/ IP 
  7. Coding language 

এবার চলুন সাইবার ক্রাইম (Cyber Crime) সম্পর্কে একটু ধারণা নেই, Cyber Crime (সাইবার ক্রাইম) কিঃ- 

Cyber Crime হলো, ইন্টারনেট দুনিয়ায় হওয়া যেকোনো ধরনের অন্যায় বা অবৈধ কার্যকলাপ গুলোকেই বলে cyber crime. 

আপনি যদি হ্যাকিং অবৈধ কাজের জন্য করেন তাহলে আপনি Cyber Crime বা সাইবার ক্রাইমার দের অন্তর্ভূক্ত হবেন । 

Cyber Crime আইনঃ

বাংলাদেশের cyber crime  আইন section ২৮ অনুযায়ী যেকোনো computer server বা যেকোনো device hacking এর অপরাধ প্রথম বার প্রমাণিত হলে এর সাজা ১৪ বছর জেল বা ১ কোটি টাকা কিংবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে । যদি দ্বিতীয় বার প্রমাণিত হয় তবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অনধিক ৫ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে । 

Cyber Crime এর বিচারের জন্য Bangladesh cyber Tribunal গঠন করা হয়েছে ২০০৬ সালে । 

এবার চলুন legal hacking সম্পর্কে জেনে নেইঃ

আমি আগেই বলেছি White Hat Hacker যাদের  Ethical hecker বলা হয়, এই Ethical hacking হলো সম্পুর্ণ legal hacking, সব হ্যাকারদের জ্ঞান, দক্ষতা একই । তবে, এই জ্ঞান, দক্ষতা, গুণ তারা ভালো কাজের জন্য ব্যবহার করেন । মূলত Ethical hacker রা system security expert হিসেবে কাজ করে । যাতে ভবিষ্যতে কোনো black hat hacker রা system গুলো hack করতে না পারে । 

আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন, হ্যাকিং কি ? হ্যাকিং কতো প্রকার ? হ্যাকার কাকে বলে ? হ্যাকার কতো প্রকার ? হ্যাকিং করতে কি কি জানা প্রয়োজন ? হ্যাকিং শেখার উপায় ? সাইবার ক্রাইম কি ? এবং legal hacking কি ? আশা করি আপনি আপনার প্রশ্ন গুলোর উত্তর পেয়েছেন ।

পরিশেষেঃ

আপনি যদি উপরে উল্লেখিত Linux, Programming Language, Networking and device, Server, Database, Hardware, Security, anonymous এই বিষয় গুলোর উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পারেন এবং যদি এর সঠিক ব্যবহার করতে পারেন তাহলে হ্যাকিং দুনিয়ার প্রফেশনাল হ্যাকার হতে পারবেন ।

হ্যাকিং কিভাবে কাজে লাগাবেন সেইটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার উপর । তবে কখন ভুল পথে হাটবেন না । আশা করি আজকের এই পোস্ট পড়ে হ্যাকিং সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন ।

তাহলে আজ আমরা জানলামঃ- ১. হ্যাকিং কি ? ২. হ্যাকিং কতো প্রকার? ৩. হ্যাকার কাকে বলে? ৪. হ্যাকার কতো প্রকার? ৫. হ্যাকিং করতে কি কি জানা প্রয়োজন ? ৬. হ্যাকিং শেখার উপায় ? ৭. সাইবার ক্রাইম কি ?  ৮. লিগাল হ্যাকিং সম্পর্কে । আশা করি আপনারা এই বিষয় গুলো বুঝতে পেরেছেন ।  

আজকে এই পর্যন্ত বিদায় নিলাম ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করবেন । ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

আসসালামু আলাইকুম....! আমার নাম রবি চৌধুরী , নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে ও জানাতে এবং পড়তে ভালো লাগে । আমি একজন নতুন ব্লগার । সবসময় পাঠকদের জন্য ভালো কিছু লেখার চেষ্টা করবো ।