ডিজিটাল ক্রিপ্টোকারেন্সি

বিটকয়েন বা ডিজিটাল মুদ্রা বিশ্বের অন্যতম এবং প্রথম মুক্ত সোর্স ক্রিপ্টোকারেন্সি । ডিজিটাল মুদ্রা লেনদেনের প্রক্রিয়ায় কোন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান এর প্রয়োজন পড়ে না অন্যদিকে এটি কোন দেশের সরকারের ইস্যুকৃত মুদ্রা নয়‌‌ ।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

বিটকয়েন লেনদেনের প্রক্রিয়া:

বিটকয়েন যেহেতু ডিজিটাল মুদ্রা তাই এটি ডিজিটাল প্রযুক্তি অর্থাৎ কম্পিউটার প্রসেসিং এর মাধ্যমে অনলাইনের প্রেরক হতে সরাসরি প্রাপকের কাছে পৌঁছায় এখানে কোন পরোক্ষ পদ্ধতির প্রয়োজন পড়ে না ।

ক্রিপ্টোগ্রাফির সাহায্যে প্রেরক ও প্রাপকের লেনদেনগুলো প্রত্যাখান করা হয় অপরদিকে একটি খতিয়ানে প্রকাশ্যে লিপিবদ্ধ করা হয় তাদের লেনদেনের প্রমাণ।

এটি উন্মুক্ত খতিয়ান হওয়ায় এটিকে ব্লকচেইন বলা হয়। মাইনিং এর মাধ্যমে বিটকয়েন উৎপাদিত হয় যেখানে কম্পিউটারের প্রসেসিং ক্ষমতার ভিত্তিতে লেনদেন লিপিবদ্ধ এবং সত্যাখ্যান করা হয়।

লেনদেন হতে উৎপাদিত বিটকয়েন প্রতি চার বছর পর পর কমে যায় । বলা হয়েছে ২১৪০ সাল পর্যন্ত মোট ২ কোটি ১০লক্ষ বিটকয়েন তৈরি হবে এবং পরবর্তীতে নতুন কোন বিটকয়েন তৈরি করা হবে না।

বিটকয়েনের জনপ্রিয়তা:

একাধিক দেশে বিটকয়েন জনপ্রিয় হওয়ার মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে এটির লেনদেনের ক্ষেত্রে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পড়ে না ।

বৈধ পণ্য লেনদেনের পাশাপাশি অবৈধ অর্থাৎ মাদক চোরাচালান এবং অর্থ পাচার কাজেও বিটকয়েনের ব্যবহার হয়ে থাকে।

বিটকয়েন ডিজিটাল কারেন্সি হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মুদ্রার বিপরীতে এর দর মারাত্মক ওঠানামা , দুষ্প্রাপ্যতা এবং ব্যবসায় এর সীমিত ব্যবহারের কারণে অনেকেই এর সমালোচনা করেন ।

কানাডার ভ্যানক্যুভারে বিটকয়েন এর সর্বপ্রথম এটিএম মেশিন চালু করা হয়েছিল । কানাডিয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বিটকয়েনের বেআইনি ব্যবহার ঠেকাতে এর গ্রাহকের নিবন্ধনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ।

বিটকয়েন কে নিরাপদ রাখার উপায় : 

অসাধু ব্যবসায়ীরা অর্থাৎ হ্যাকাররা সর্বদাই বিটকয়েন হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় নিযুক্ত থাকবে তাই এটি সর্বপ্রথম সুরক্ষিত করা উচিত ।

বিটকয়েন রক্ষার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো বিটকয়েন ওয়ালেট ব্যবহার করা । বিটকয়েনের দুটি ওয়ালেট সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক -

১. Ledgernanos: Ledgernanos একটি বিটকয়েন সিকিউরিটি কোম্পানি যার মাধ্যমে সিকিওর বিটকয়েন স্টোরেজ ডিভাইস দেওয়া হয়, Ledgernanos বর্তমান যুগে সর্বাপেক্ষা সুরক্ষিত একটি ওয়ালেট ।

২.Trezor: এটি একটি হার্ডওয়্যার ওয়ালেট । এর মাধ্যমে অফলাইনে বিটকয়েনের প্রাইভেট কি পাওয়া যায়। তাই ইন্টারনেটের পাশাপাশি এই অফলাইন সার্ভিসের জন্য এটি খুবই জনপ্রিয় ।

কার্যপ্রণালী:

বিটকয়েনের নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পড়ে না । বিটকয়েন গ্রাহক হতে গ্রাহকের কম্পিউটারের মাধ্যমে লেনদেন করা হয় ।

বিটকয়েন মাইনারকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে নিমিষেই বিটকয়েন উৎপন্ন করা সম্ভব । অনলাইনে উন্মুক্ত সোর্স সফটওয়্যার এর মাধ্যমে বিটকয়েনের সমস্ত লেনদেন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

বিটকয়েনের নিরাপত্তা রক্ষায় একটি গ্রাহকের ডিজিটাল ওয়ালেটের সংরক্ষিত থাকে। বিটকয়েন খুবই সীমিত আকারে উৎপন্ন করার পর এর উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

বিটকয়েন প্রতিবার লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি স্বতন্ত্র ইলেকট্রনিক সিগনেচার তৈরি হয় যা অন্যান্য মাইনার কর্তৃক নিক্ষিত হয় এবং নেটওয়ার্কের সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষিত হয় এবং গ্রাহকদের বর্তমান লেজার হালনাগাদ করা হয় কেন্দ্রীয় তথ্য ভান্ডারে।

গ্রাহক কোন পণ্য ক্রয় করলে তা বিক্রেতারে একাউন্টে পাঠানো হয় এবং বিক্রেতা পরবর্তীতে কোন পণ্য ক্রয় করলে তার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রয়োজনীয় বিটকয়েন কমিয়ে দেওয়া হয় ।

চার বছর পর পর বিটকয়েনের সংখ্যা গণনা করে মোট সংখ্যা নির্ধারণ করা হয় যাতে তা বাস্তব মুদ্রার সাথে সামঞ্জস্য থাকে।

বৈধতা :

বাংলাদেশে বিটকয়েনের বৈধতা নেই তবে ভবিষ্যতে এর প্রচলন শুরু হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ২০১৪ সালে বিটকয়েনের লেনদেন অবৈধ ঘোষণা দেওয়া হয় ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, "এসব মুদ্রা লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোন নিয়ন্ত্রক নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত নয় বিধায় এসব ভার্চুয়াল মুদ্রার ব্যবহার বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন,

১৯৪৭; সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর দ্বারা সমর্থিত হয় না"।

কিছু সংস্থা গ্রাহকদের ২৪/৭ অর্থ পরিচালনা করতে সহায়তার জন্য অটোমেটেড ক্রিপ্টোকারেন্সি সমাধান প্রস্তাব করেছে । এর চমকপ্রদ সুবিধা হল মানুষের আবেগকে বাণিজ্য থেকে সরানো হয়।

সাধারণত ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তে আবেগের কারণে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। বিটকয়েন ট্রেডিং বটস অ্যালগরিদম গুলি সাধারণ কোডিং এর কিছু অভিজ্ঞতার সাথে ব্যবসায়ীরা ডিজাইন করেন।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ