Cryptocurrency - মুদ্রা জগতের এক অদৃশ্য শক্তিশালী মুদ্রা

Cryptocurrency নিয়ে বর্তমানে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। এই আর্টিকেলে Cryptocurrency কি ,এর কত প্রকার আছে কিভাবে এটি কাজ করে, Bitcoin কি?

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

এটি কিভাবে আয় করা যায়, এর সুবিধা অসুবিধা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।

ইদানিং খবরে, অনলাইন নিউজ পোর্টালে, ফেসবুকে Cryptocurrency সম্পর্কে খুব শোনা যায়। শব্দটি খুব জনপ্রিয় হয়ে গেছে।

কিন্তু আসলে কি এই Cryptocurrency ?  এই currency কি visible, এই currency আমাদের ১০ টাকা ৫ টাকার মতো বহন করা যায়?

এই currency কি কোন সরকার কর্তৃক পরিচালিত?, এই currency কি কোন ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে? এমন অনেক প্রশ্নই আছে আজকে আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুব সহজভাবে দেওয়ার চেষ্টা করব এই আর্টিকেলে।

Cryptocurrency কি?

Crypto শব্দের অর্থ হচ্ছে 'গোপন' আর currency শব্দের অর্থ হচ্ছে 'মুদ্রা'। Cryptocurrency শব্দের অর্থ হচ্ছে 'গোপন মুদ্রা' বা 'অদৃশ্য মুদ্রা' যার কোন দৃশ্যমান পার্টস নেই। এটি মূলত ডিজিটাল মুদ্রা যা বাইনারি সিস্টেমের মাধ্যমে তৈরি হয়।

কম্পিউটার যেমন বাইনারি সংখ্যা ০ আর ১ ছাড়া কিছু বোঝেনা তেমনি এই মুদ্রাও ০ আর ১ দিয়েই তৈরি।

এই মুদ্রা কোন সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয় না। শুধুমাত্র যারা ব্যবহার করে তাদের মধ্যে আদান-প্রদান হয় তৃতীয় কোন পক্ষ এর মধ্যে নাক গলাতে পারে না।

এটি একটি ভার্চুয়াল কারেন্সি যা ডিজিটাল ওয়ালেটে সংরক্ষণ করা যায়।

Cryptocurrency- র রূপভেদ 

বর্তমানে ইন্টারনেট মহলে অসংখ্য Cryptocurrency আছে। এমনও কিছু currency আছে যারা নিজেদের অবস্থান মার্কেটে তৈরি করতে পারিনি তারা হারিয়ে গেছে। বর্তমানের বাজারে সেরা ১০টি cryptocurrency গুলো হলো-

  • Bitcoin
  • Ethereum
  • Tether
  • BNB
  • USD coin
  • XRP
  • Binance USD
  • Cardano
  • Polygon
  • Dogecoin

আরো অনেক রয়েছে কিন্তু এই প্রথম দশটা মধ্যে সবচেয়ে দামি এবং সবচেয়ে ব্যবহৃত cryptocurrency হল  BITCOIN

Bitcoin কি?

২০০৯ সালের সাতোশি নাকামোতো বিটকয়েন আবিষ্কার করেন। বর্তমানে cryptocurrency গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সেরা এবং সবচেয়ে দামি currency এটি। বর্তমানে এই বিটকয়েন দিয়ে বিজনেস করে অনেকে মিলিয়নিয়ার বিলিয়নিয়ার হয়ে যাচ্ছে। 

সাধারণত বিটকয়েন পার-টু-পার(P2P) নেটওয়ার্ক বেসিস লেনদেন হয়ে থাকে। P2P (Peer 2 Peer) হচ্ছে এমন একটি সিস্টেম যার মাধ্যমে ক্রিপ্টো কারেন্সি লেনদেন হয় একে অপরের সাথে সরাসরি ভাবে। এই লেনদেনের মধ্যে তৃতীয় কোন পক্ষ তদারকি করতে পারবে না।

Bitcoin এর ব্যবহার 

বর্তমানে বিটকয়েন এতটাই জনপ্রিয় যে এখন অনেক জায়গাতেই এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। অনেক ই কমার্স প্রতিষ্ঠান এখন বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ এর মাধ্যমে পণ্য বেচাকেনা করে।

Microsoft, Wikipedia, Amazon, PayPal এর মত বড় বড় প্রতিষ্ঠান এখন বিটকয়েন গ্রহণ করে। বিটকয়েনের সবচেয়ে দারুন সুবিধা হচ্ছে এটি খুব দ্রুত ও খুব সহজেই লেনদেন করা যায়।

এটি লেনদেনের ক্ষেত্রে কোন ব্যাংক বা কার্ডের প্রয়োজন হয় না। এখন অনেক ওয়েব ডেভেলপারাও তাদের কাজের বিনিময়ে বিটকয়েন দাবি করে।

বোঝাই যাচ্ছে আগামী বিশ্বের মূল হাতিয়ার হবে এই ডিজিটাল কারেন্সি।  তখন কাগজের টাকার কোন মূল্যই থাকবে না।

Bitcoin এর রেট

Bitcoin এর বাজার মূল্য অনেক উঁচু এবং এই মূল্য প্রচুর উঠানামা করে। 

1 Bitcoin = 2,596,426.73 BDT (আর্টিকেল লিখার সময়)

1 Ethereum (ETH) = 177,918.36 BDT (আর্টিকেল লেখার সময়)

ভাবা যায় এক বিটকয়েন এর মূল্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৬ লক্ষ। দ্বিতীয় কারেন্সি ETH এর মূল্য প্রায় ২ লক্ষ। কতটা পার্থক্য বিটকয়েনের সাথে।

Bitcoin ইনকাম

উপরে তো দেখলেন বিটকয়েন এর মূল্য কতটা উঁচু। কিন্তু এতটা উঁচু হলেও এর মাধ্যমে আয় করার কিছু উপায় রয়েছে।

  •  বর্তমানে Bitcoin এর এতই নামডাক যে এর প্রভাব শেয়ার মার্কেটে পড়তে শুরু করেছে। অনেকেই বর্তমানে টাকা বা ডলার বিটকয়েনে এক্সচেঞ্জ করে স্টক মার্কেটে ব্যবহার করে আয় করছে। এই পদ্ধতিতে টাকা বা ডলার লস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে সঠিক সুযোগের ব্যবহার করতে হবে। 
  • মিনিমাম ৯৯৯ ডলার দিয়ে বিটকয়েন কিনে সুযোগ মত বিক্রি করে দিয়েও লাভ করা যায়।
  • আরেকটি উপায় হচ্ছে বিটকয়েন মাইনিং। এটি সবচেয়ে জটিল ও ব্যয়বহুল উপায়। কারণ মাইনিং করার জন্য কম্পিউটার ভর্তি দামি গ্রাফিক্স কার্ড এর প্রয়োজন পড়ে, উচ্চগতি সম্পন্ন কম্পিউটার এর প্রয়োজন পড়ে যা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না।

Bitcoin মাইনিং

বিটকয়েন মাইনিং এর মাধ্যমে বিটকয়েন আয় করা যায়। কিন্তু এই প্রক্রিয়াটা খুব জটিল কারণ এই প্রক্রিয়ার জন্য উচ্চ গতিসম্পন্ন কম্পিউটারের দরকার হয়। এটা সবার দ্বারা সম্ভব হয় না। 

বিটকয়েন শুধুমাত্র অনলাইন পেমেন্ট এবং ট্রান্সজেকশন করার মাধ্যমে লেনদেন হয়ে থাকে। আর এই লেনদেন করার সময় ট্রানজেকশন ভেরিফাই করতে হয়।

যারা ভেরিফাই করে তাদের কি বলে বিটকয়েন মাইনার। অর্থাৎ মাইনাররা লেনদেন কি সঠিক হচ্ছে কিনা তা চেক করে।

তাদের এই কাজের উপহারস্বরূপ কিছু বিটকয়েন দেওয়া হয়। এভাবেই মাইনাররা বিটকয়েন মাইনিং করে। এই ব্যাপারে বিস্তারিত অন্য কোন একদিন আলোচনা করবো।

Bitcoin ব্যবহারের সুবিধা 

  • পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে কোন ঝামেলা ছাড়াই  বিটকয়েন লেনদেন করা যায়। 
  • যারা বিটকয়েন লেনদেন করে তারা একে অপরের সাথে সরাসরি লেনদেন করতে পারে। এর জন্য তাদের কোন তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন হয় না।
  • কালো টাকা সাদা করার এক মোক্ষম মাধ্যম বিটকয়েন ক্রয় করা। কারণ এখানে কোন Central Authority নাই, কোন checking নেই। তাই খুব সহজেই টাকা সাদা করা যায়।
  • সাধারণ লেনদেনের ক্ষেত্রে কোন নিয়ম ভঙ্গ করলে ব্যাংক গ্রাহকের একাউন্ট ব্যান করে দিতে পারে। কিন্তু বিটকয়েন লেনদেনের ক্ষেত্রে এই ঝামেলা নেই।

Bitcoin ব্যবহারের অসুবিধা 

  • এসব Cryptocurrency- র কোন Central Authority নেই। তাই টাকা লেনদেনের ব্যাপারে খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কারণ জবাবদিহি করার কেউ নেই। 
  • কেউ আপনার বিটকয়েন একাউন্ট হ্যাক করে বিটকয়েন চুরি করলে তা উদ্ধারের উপায় নেই। 

সর্বোপরি বলব, 

বর্তমানে cryptocurrency মানুষের আগ্রহের এক মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মানুষ বর্তমানে এই cryptocurrency-র প্রতি যে আগ্রহ দেখাচ্ছে তাতে বলাই যায় আগের দিনের রুপা তামার মুদ্রা যেভাবে বিলুপ্ত হয়ে গেছে সেভাবে কাগজের মুদ্রাও হেরে যাবে এই Digital Currency-র  কাছে। ধন্যবাদ।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ