পড়ালেখায় মনোযোগ বাড়ানোর সকল পদ্ধতি

আসসালামুয়ালাইকুম,আজকে জানবো পড়ালেখা মনোযোগ বাড়ানোর সকল পদ্ধতি সম্পর্কে এবং সবার শেষে থাকছে যারা একদমই পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারো না তাদের জন্য করণীয়।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

১। লক্ষ্য নির্ধারণ

প্রত্যেক কাজেরই একটি লক্ষ্য থাকা উচিত।যদি কোনো কাজের আমরা লক্ষ্যই না জানি, সেই কাজের ফলাফল সম্পর্কে যদি আমাদের কোন ধারণাই না থাকে তাহলে আমরা সেই

কাজ করার প্রতি কোনো আগ্রহ পাবো না। তাই কোনো কিছুর প্রতি মনোযোগ বাড়াতে হলে অব্যশই জানতে হবে আমি কাজটা কেনো করছি। যেমন ধর তুমি যদি অষ্টম শ্রেণি,

দশম শ্রেণি বা দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হয়ে থাকো তাহলে তোমার লক্ষ্য থাকবে কিভাবে তুমি বোর্ড পরীক্ষার ভালো ফলাফল করবে। তখন তোমার মধ্যে সবসময় থাকবে যে বোর্ড

পরীক্ষায় তোমাকে ভালো করতে হবে, তখন তুমি যখন পড়াশোনা করতে বসবে তখন তোমার আর কোনো আজেবাজে চিন্তা মাথায় আসবে না। তাই তুমি কেনো পড়ছো সেট যদি

আগে থেকে নির্ধারণ করা থাকে তাহলে তোমার পড়ালেখায় মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে

২। রুটিন তৈরি করা

পড়ালেখায় মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য রুটিন তৈরি করাও একটা কার্যকর পদ্ধতি ।তবে রুটিনটা টার্গেট ভিত্তিক হতে হবে। তোমার রুটিন যদি এমন হয় যা আমি সকাল ৭টায় উঠব

এরপর ২ ঘন্টা অমুক বইয়ের এই অধ্যায়টা পড়বো এরপর ৩০ মিনিটএ খাবো, এরপর তিন ঘণ্টা অঙ্ক করব তাহলে সেই রুটিন কার্যকর হবে না। এই রুটিন অনুসরণ তুমি করতে

পারবে না। তাহলে আমি তোমায় কোন রুটিনের কথা বললাম। আমার রুটিনটি হলো টার্গেটভিত্তিক রুটিন । তুমি আগেরদিন রাতে ঘুমানোর আগে ঠিক করে নিবে যে পরবর্তী দিনে

তুমি কতটুকু পড়বে। তুমি কয়টা অধ্যায় শেষ করবে। পরদিন তোমার কাজ হবে সেই অধ্যায়গুলো শেষ করা, সেই অধ্যায় গুলো শেষ করাই হবে তোমার লক্ষ্য। সেট তুমি একটানা

দুই তিন ঘন্টা পড়েও শেষ করতে পারো অথবা যখন যখন পড়তে ভালো লাগবে তখনই তুমি পড়ে শেষ করতে পারো। আমরা টাইম ভিত্তিক কোনো রুটিন অনুসরণ করবো না

কারণ ধরো তোমার সকাল আটটা থেকে দশটা অঙ্ক করার কথা কিন্তু তখন তোমার কোনো কাজ এসে পড়ল, হয়ত তুমি বাজার গেলে বা স্কুলে কোনো কাজ করতে গেলে বা কোনো

বন্ধু তোমার সাথে দেখা করতে আসলো। এরপর সকাল আটটা থেকে দশটা সময় পার হয়ে গেলে পরবর্তী সময় তুমি আর এই ম্যাথ করতে পারবে না। তখন তোমার আস্তে আস্তে

হতাশ লাগবে এবং পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ আসবে না  আর যদি তুমি টার্গেটভিত্তিক পড়ো তাহলে তোমার কোনো সময়ের বাধ্য-বাধকতা নেই। তুমি যখন সময় পাবা তখনই

তুমি তোমার দিনের কাজ শেষ করতে পারবে। ফলে তোমার দিনের টার্গেটও পূরণ হবে আবার পড়াশোনা করতে বিরক্তও লাগেবে না।

৩। পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ

পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বাধ্যতামূলক পড়াশোনায় মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে এমন সব জিনিস দূরে রাখতে হবে। বিছানায় শুয়ে পড়ার চেয়ে টেবিলে

পড়লে অনেক সময় ধরে মনোযোগ ধরে রাখা যায়। পড়ার সময় অব্যশই তোমার মোবাইল তোমার আম্মু, আব্বু বা বড় কারোর কাছে জমা দিয়ে আসবে কারণ আজকাল তোমাদের

পড়ালেখা না হওয়ার সবচেয়ে বড় অবদান এই মোবাইলের। এছাড় পড়ার সময় মোবাইল, টিভি ইত্যাদি বন্ধ রাখুন ।

৪। মোটিভেশন

পড়াশোনায় বসার আগে যদি ৫ মিনিট কোনো মোটিভেশন ভিডিও দেখো তাহলে তা ব্রেনের কর্মক্ষমতা বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। তবে মোটিভেশন ভিডিও যেনো সময় নষ্টের কারণ না

হয়ে পরে। দিনে ৫/১০ মিনিট এর বেশী মোটিভেশন ভিডিও দেখার প্রয়োজন নেই?

৫। ধর্মীয় অনুশাসন

যার যার ধর্মের অনুসারে প্রার্থনা করলেও তা তোমার মনোযোগ বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করবে। যারা ইসলাম ধর্মের অনুসারী তারা পাচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে, কিছু সময়

হলেও কোরয়ান তিলাওয়াত করবে এবং সবসময় আল্লাহতায়া'লার কাছে সাহায্য চাবে তোমার জ্ঞান বৃদ্ধি করার জন্য।

৬। ব্যায়াম করা

চেষ্টা করবে সকালে উঠে ২০ মিনিট বা বিকেলে ২০ মিনিট কিছু শরীরচর্চা করতে। শরীরচর্চা করলে দেহে রক্ত প্রবাহমাত্রা বেড়ে যায় । ফলে মস্তিষ্কেও রক্ত প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যায়।

শরীরচর্চা তোমার দেহ সুস্থ রাখার পাশাপাশি তোমার পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধিতেও সাহায্য করবে। এছাড়া তোমরা বিভিন্ন যোগ-ব্যায়ামও করতে পারো।

৭। সঠিক সময়ে বিশ্রাম নেয়া

অব্যশই পর্যাপ্ত ঘুম(নূন্যতম ৬ ঘণ্টা), বিশ্রাম, পর্যাপ্ত পানি পান করা (২ লিটার) ,পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এসব কিছুই পরোক্ষ ভাবে তোমার পড়ালেখায় মনোযোগ

বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত। তাই পড়ালেখার পাসাপাশি অব্যশই এসব দিকে নজর দিতে হবে।

৮। পোমোডোরো টেকনিক

যারা একদমই পড়ালেখায় মনোযোগী না তারা এই পোমোডোরো টেকনিক ব্যবহার করে আস্তে আস্তে তোমাদের মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারো।পোমোডোরো টেকনিক হলো কোনো

একটি কাজ একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত গভীর মনোযোগ দিয়ে করা। যারা একদমী মনোযোগী না তারা তোমার মোবাইলে ২৫ মিনিট এর একটা টাইমার সেট করে পড়তে বসবা

এবং তোমার লক্ষ্য এমন থাকতে হবে যে এই ২৫ মিনিট যাই কিছু হোক না কেন আমি এই ২৫ মিনিট পড়ালেখা বাদে অন্য কোনো কিছু করবো না। এভাবে দৃড় ভাবে ২৫

মিনিট পড়বে। ২৫ মিনিট শেষ হলে ৫ মিনিট এর আরো একটা টাইমার সেট করবে , সেই ৫ মিনিট তুমি যা ইচ্ছা করবে দরকার পড়লে মোবাইল চালাবে । তবে তোমার

নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে ৫ মিনিট এর এলার্ম বাজার সাথে সাথেই তোমার মোবাইল রেখে দিতে হবে, তখন তুমি যাই কিছু কর না কেন, কারো সাথে কথা বললেও

তুমি ৫ মিনিট শেষ হওয়ার সাথে সাথে মোবাইল রেখে দিবে এবং আবার ২৫ মিনিট পরবে । এভাবে আস্তে আস্তে তুমি পরেরদিন ২৫ মিনিট কে ২৬ মিনিট করবে । এভাবে

তুমি মনোযোগ আস্তে আস্তে বৃদ্ধি করবে এবং একটা সময় তুমি দেখবে তুমি চাইলেই পড়ালেখা অনেকসময় ধরে করতে পারছো।

উপরের নিয়মগুলো  আসা করি তোমার পড়ালেখা মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

চা, কবিতা, বৃষ্টি, কাশফুল, নদী, পাহাড় - বেচে থাকা